কুষ্টিয়া অফিস :: অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির প্রভাবে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ায় এবং উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিিল কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কৃষককুল। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে এবং ঘুরে দাড়াতে কৃষকরেরা আবাদ করেছিল আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল আমন ধান। অনুকুল আবহাওয়ার কারনে কৃষকদের ভাগ্যের চাকা খুলে দেয় আগাম জাতের রোপা আমন ধান। উপজেলায় চলতি মৌসুমে রোপা পদ্ধতিতেই কৃষকেরা আমনের চাষ করেছিলেন। কৃষকেরা এ বছর বোনা আমনের চেয়ে রোপা আমন চাষে বেশী আগ্রহী ছিল। কারন বর্ষা মৌসুমে জমিতে সেচ না লাগায় এবং জমিতে সার, বীজ, কীটনাশক ও নিড়ানি খরচ কম লাগায় এতে কৃষকদের আগ্রহ বেড়ে যায়। এছাড়াও রোপা আমন অল্প সময়ের মধ্যে ঘরে তুলতে পারায় কৃষকেরা রোপা আমন চাষে বেশি ঝুকে পড়ে। আগাম জাতের রোপা আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে পারায় কৃষকদের মুখে হাসির ঝলক ফুটে উঠেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা ধান কাটা প্রায় শেষ করেছে। আগাম জাতের আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন কৃষকরা। পাকা ধানের সোনালী রংয়ে ভরে উঠেছিল মাঠের পর মাঠ। মনে হয়েছিল স্বয়ং লক্ষ্মীদেবী কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশামোচন করতে নিজেই নেমে এসেছিলেন মর্ত্যধামে। কুমারখালী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবছর রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের কথা থাকলেও তা ছাড়িয়ে ১২ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করে কৃষকেরা। প্রতি হেক্টর জমিতে বিনা-৭ উৎপাদন হয়েছে ৫ মেঃ টন, বিনা-৩৯ হয়েছে ৫.৩ মেঃ টন, ব্রি ধান- ৪৯ হয়েছে ৫.৫ মেঃ টন, ব্রি-২৯ উৎপাদন হয়েছে ৫.৪ মেঃ টন, ব্রি-৫৮ উৎপাদন হয়েছে ৫.৩ মেঃ টন, ব্রি-৫২ উৎপাদন হয়েছে ৪.৯ মেঃ টন, ব্রি-৫৭ উৎপাদন হয়েছে ৫.১ মেঃ টন, ব্রি-৬২ উৎপাদন হয়েছে ৪.৫ মেঃ টন, বিআর-২৩ উৎপাদন ৪.৫ মেঃ টন, বিআর-১১ উৎপাদন হয়েছে ৫.৫ মেঃ টন। এছাড়াও স্থানীয় ধানের জাত বাদশা ভোগ ১.৮ ও কালিজিরা ১.৮ মেঃ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এবিষয়ে একটু মৃদু হাসি দিয়ে আব্দুল নামক একজন কৃষক বলেন, সময় মত সার ও বীজ পাওয়ায় এবং চাষের অনুকুল আবহাওয়া থাকায় এবারের রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন পাওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, জাত ভেদে এবার বিঘা প্রতি ১৮-২৩ মন ধান উৎপাদন হয়েছে। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং কৃষকদের সময়মত চাষাবাদে বিগত বছর গুলোর তুলনায় এবছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি বলেন, এবার রোপা আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে।